ডিজিটাল মার্কেটিং শিখতে চাইলে এর ভিতরে থাকা বিভিন্ন বিষয় শিখতে হবে। সাধারণভাবে, ডিজিটাল মার্কেটিং বলতে আমরা অনেকেই শুধুমাত্র ফেসবুক অ্যাড বা ফেসবুক বুস্টিং এবং গুগল অ্যাড ইত্যাদি বুঝে থাকি। কিন্তু, এর ভিতর আরও অনেক বিষয় রয়েছে।

ডিজিটাল পদ্ধতিতে পণ্য বা সেবার প্রমোশন বা বিক্রয় করার জন্য যেসব পদ্ধতি ব্যবহার করা হয় সেগুলোর সমষ্টিকে ডিজিটাল মার্কেটিং বলা হয়। এটি একটি বড় সেক্টর যার মাঝে অনেক সাব সেক্টর রয়েছে অর্থাৎ বিভিন্ন মাধ্যমে নির্দিষ্ট গ্রাহকদের নিকট পৌঁছানো যায়।

যারা নিজেকে একজন ডিজিটাল মার্কেটার হিসেবে গড়ে তুলতে চান, তাদেরকে এর গুরুত্বপূর্ণ স্কিলগুলো অর্জন করতে হবে। আপনি যদি Digital Marketing Course করতে চান তাহলে এই লিস্টটি আপনাকে সাহায্য করবে।

এই পোস্টে আমি আপনাদের সাথে ডিজিটাল মার্কেটিং এর গুরুত্বপূর্ণ ২০টি স্কিল নিয়ে বিস্তারিত তথ্য শেয়ার করবো। এই স্কিলগুলো রপ্ত করতে পারলে আপনি নিজেকে একজন ডিজিটাল মার্কেটার হিসেবে পরিচয় দিতে পারবেন এবং নিজের কাজ ও ক্লায়েন্ট এর কাজ অল্প সময়ে অল্প খরচেই সম্পন্ন করতে পারবেন। 

ডিজিটাল মার্কেটিং যা যা শিখতে হয়

ডিজিটাল মার্কেটিং কি কি শেখানো হয়

অনলাইন মার্কেটিং এর ভিতর অনেক কাজ রয়েছে যেগুলো করে যেকোনো পণ্য বা সেবার মার্কেটিং করা যায়। এটিকে আমরা একটি সমুদ্রের সাথে তুলনা করতে পারি।

এই সমুদ্রের অর্থাৎ ডিজিটাল মার্কেটিং এর অনেক শাখা-প্রশাখা রয়েছে। আপনি যদি নিজেকে একজন সফল ডিজিটাল মার্কেটার হিসেবে গড়ে তুলতে চান, তাহলে আপনাকে সময়ের সাথে তাল মিলিয়ে নিচে উল্লেখ করে দেয়া ২০টি ডিজিটাল মার্কেটিং এর স্কিল রপ্ত করতে হবে।

ডিজিটাল মার্কেটিং এর ২০টি স্কিল সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য নিচে উল্লেখ করে দেয়া হয়েছে।

  1. সার্চ ইঞ্জিন অপটিমাইজেশন বা এসইও (SEO)
  2. সার্চ ইঞ্জিন মার্কেটিং বা এসইএম (SEM)
  3. সোশ্যাল মিডিয়া মার্কেটিং বা এসএমএম (SME)
  4. কন্টেন্ট মার্কেটিং
  5. অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং
  6. ই-মেইল মার্কেটিং
  7. সিপিএ মার্কেটিং
  8. ই-কমার্স মার্কেটিং
  9. মার্কেট ও কম্পিটিটর রিসার্চ
  10. ডিজাইন
  11. নেটওয়ার্কিং
  12. পার্সোনাল ব্রান্ডিং
  13. মাইক্রোসফট এক্সেল
  14. সোশ্যাল পেইড অ্যাডভার্টাইজিং
  15. অটোমেশন
  16. প্রেজেন্টেশন ডিজাইন
  17. ইনফ্লুয়েন্সার মার্কেটিং
  18. ওয়ার্ডপ্রেস
  19. কমিউনিকেশন
  20. কনভার্সন রেট অপ্টিমাইজেশন

কজন ব্যক্তি পরিপূর্ণ ডিজিটাল মার্কেটার হতে চাইলে তাকে উপরের তালিকার এই বিষয়গুলো রপ্ত করতে হবে। ডিজিটাল মার্কেটিং করে আপনার ব্যবসা বা ব্যবসায়ের পণ্য কিংবা সেবার মার্কেটিং করতে চাইলে উপরের এই তালিকায় থাকা কাজগুলো করতে পারেন।

Digital Marketer হতে আপনার কি শেখা উচিৎ

আপনার পণ্য বা সেবার ধরনের উপর নির্ভর করে ডিজিটাল মার্কেটিং এর কোন কাজগুলো করে পণ্য বা সেবার মার্কেটিং করবেন তা নির্ভর করবে। আপনার ব্যবসায়ের পণ্য সম্পর্কে গ্রাহকদের কাছে প্রচারণা চালানোর জন্য সোশ্যাল মিডিয়া মার্কেটিং, সার্চ ইঞ্জিন মার্কেটিং, ই-মেইল মার্কেটিং, কন্টেন্ট মার্কেটিং, সার্চ ইঞ্জিন অপ্টিমাইজেশন করতে পারেন।

ডিজিটাল মার্কেটিং শিখতে চাইলে উপরোক্ত এই বিষয়গুলো শিখতে হবে। এখানে উল্লেখ করে দেয়া প্রতিটি বিষয়ের ভিতর আরও অনেক ছোট ছোট বিষয় রয়েছে।

সার্চ ইঞ্জিন অপটিমাইজেশন

সার্চ ইঞ্জিন অপ্টিমাইজেশন (SEO) হলো একটি প্রক্রিয়া যার মাধ্যমে ওয়েবসাইট বা ওয়েবপেজগুলিকে সার্চ ইঞ্জিন রেজাল্ট পেজের (SERPs) উপরের দিকে র‍্যাঙ্ক করার জন্য কাজ করা হয়। এর মানে হলো, যখন কেউ কোনো বিষয়ে সার্চ করে, তখন SEO-অপ্টিমাইজ করা ওয়েবসাইটগুলি সার্চ রেজাল্ট পেজের উপরের দিকে র‍্যাঙ্ক করার সম্ভাবনা থাকে সবথেকে বেশি।

এর ফলে, যেসব ওয়েবসাইট এসইও করা হয়েছে, সেসব ওয়েবসাইট উপরের দিকে র‍্যাঙ্ক করে এবং ভিজিটররা সেসব ওয়েবসাইটে প্রবেশ করে। এতে করে, উক্ত ওয়েবসাইট তাদের পণ্য বা সেবা বিক্রি করতে পারে।

আপনার যদি একটি ই-কমার্স ওয়েবসাইট থাকে, তাহলে আপনার ই-কমার্স ওয়েবসাইটকে এসইও বা সার্চ ইঞ্জিন অপ্টিমাইজেশন করার মাধ্যমে পণ্য বা সেবা সম্পর্কে গ্রাহকদের কাছে তথ্য পৌঁছে দেয়ার পাশাপাশি পণ্য বা সেবা বিক্রি করতে পারবেন।

সার্চ ইঞ্জিন মার্কেটিং

সার্চ ইঞ্জিন মার্কেটিং এর মাধ্যমে বিভিন্ন সার্চ ইঞ্জিনের রেজাল্ট পেজে বিজ্ঞাপন দেয়ার মাধ্যমে ওয়েবসাইটের ট্র্যাফিক বৃদ্ধি করা, ওয়েবসাইটের পণ্য বা সেবা বিক্রয় করা, পণ্য বা সেবা সম্পর্কে প্রচারণা চালানো যায়। সার্চ ইঞ্জিন ব্যবহার করে অনেকেই বিভিন্ন বিষয় সম্পর্কে সার্চ করে থাকে। অনেকেই পণ্য বা সেবা ক্রয় করার জন্য সার্চ ইঞ্জিনে সার্চ করে থাকে।

একারণে, সার্চ ইঞ্জিন মার্কেটিং করার হয়। এর মাধ্যমে গ্রাহকদের নিকট পণ্য বা সেবা সম্পর্কে প্রচারণা চালানো এবং পণ্য বা সেবা বিক্রয় করা যায়। সোশ্যাল মিডিয়া মার্কেটিং এর মতো সার্চ ইঞ্জিন মার্কেটিং এর চাহিদাও বেড়ে চলেছে।

সোশ্যাল মিডিয়া মার্কেটিং

ফেসবুক, ইনস্টাগ্রাম, টুইটার, লিঙ্কডইন এর মতো প্ল্যাটফর্ম ব্যবহার করে ব্যবসাগুলি তাদের টার্গেট কাস্টমারদের সাথে সংযোগ স্থাপন করতে পারে, ব্র্যান্ড ভ্যালু বৃদ্ধি করতে পারে এবং বিক্রয় বাড়াতে পারে।

সোশ্যাল মিডিয়াকে কেন্দ্র করে অনেক নতুন ব্যবসা গড়ে উঠেছে। সোশ্যাল মিডিয়াকে ব্যবহার করে ব্যবসাগুলো তাদের টার্গেট কাস্টমারদের কাছে তাদের ব্যবসা এবং পণ্য সম্পর্কে প্রচারণা চালাতে পারে অনেক সহজেই।

এখন প্রায় প্রতিটি ব্যবসা ডিজিটাল মার্কেটিং করে তাদের গ্রাহক বৃদ্ধি করার জন্য সোশ্যাল মিডিয়া মার্কেটিং করে থাকে। সোশ্যাল মিডিয়া ব্যবহারকারী বৃদ্ধি পাওয়ার কারণে সোশ্যাল মিডিয়া মার্কেটিং এর চাহিদাও বৃদ্ধি পাচ্ছে।

কন্টেন্ট মার্কেটিং

ব্লগ কন্টেন্ট, ভিডিও কন্টেন্ট, সোশ্যাল মিডিয়া কন্টেন্ট, ই-বুক কন্টেন্ট, ইনফোগ্রাফিক কন্টেন্টসহ বিভিন্ন ধরনের কন্টেন্ট তৈরি করার মাধ্যমে যখন পণ্য বা সেবার প্রচারণা চালানো হয় এবং পণ্য বা সেবা বিক্রয় করা হয়, তখন তাকে কন্টেন্ট মার্কেটিং বলে। কন্টেন্ট মার্কেটিং করার মাধ্যমে অনেক ব্যবসা তাদের টার্গেট কাস্টমারদের কাছে পণ্য এবং সেবা সম্পর্কে তথ্য পৌঁছে দিতে পারছে।

কন্টেন্ট মার্কেটিং একটি ইফেক্টিভ পদ্ধতি যার মাধ্যমে যেকোনো ব্যবসায়ের গ্রাহকদের কাছে অনেক দ্রুত সময়ে পৌঁছানো যায় এবং পণ্য বা সেবা বিক্রয় করা যায়।

অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং

একটি প্রতিষ্ঠান বা কোম্পানির পণ্য বা সেবা বিক্রয় করে দেয়ার মাধ্যমে যখন কমিশন গ্রহণ করা হয়, তখন এই কাজকে অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং বলা হয়। অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং করার মাধ্যমে একজন ব্যক্তি একটি পণ্য বা সেবা বিক্রয় করতে সহযোগিতা করে। এতে করে, উক্ত ব্যক্তি যেমন নির্দিষ্ট পরিমাণে কমিশন পায়। তেমনি, প্রতিষ্ঠানটি তার পণ্য বা সেবা বিক্রয় করতে পারে কমিশন দেয়ার মাধ্যমে।

অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং করে অনেকেই প্রতিনিয়ত ভালো পরিমাণ অর্থ উপার্জন করছেন। অনলাইন থেকে টাকা ইনকাম করার জন্য অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং অনেক জনপ্রিয় একটি মাধ্যম।

ই-মেইল মার্কেটিং

টার্গেট কাস্টমার বা কাস্টমারদের ই-মেইল করার মাধ্যমে পণ্য বা সেবা সম্পর্কে প্রচারণা চালানোর পদ্ধতিকে ই-মেইল মার্কেটিং বলা হয়। ই-মেইল মার্কেটিং এর মাধ্যমে নতুন পণ্য বা সেবা সম্পর্কে গ্রাহকদের কাছে ফ্রিতেই প্রচারণা চালানো যায়। ই-মেইল মার্কেটিং করার মাধ্যমে পণ্য এবং সেবা বিক্রয় করা যায়।

ই-মেইল মার্কেটিং প্রোডাক্ট ও সার্ভিস সেল, কাস্টমার কেয়ার, নারচারিং, এর একটি গুরুত্বপূর্ণ ভুমিকা রাখে। অনেক বড় বড় ডিজিটাল মার্কেটার ই-মেইল মার্কেটিং করে তাদের ব্রান্ড ভ্যালু বৃদ্ধি করছে এবং তাদের পণ্য ও সেবা বিক্রয় করছে।

সিপিএ মার্কেটিং

সিপিএ মার্কেটিং, যা Cost Per Action মার্কেটিং নামেও পরিচিত। এটি হচ্ছে একটি ডিজিটাল মার্কেটিং পদ্ধতি যেখানে একজন মার্কেটার নির্দিষ্ট কাজ (Action) সম্পন্ন করার জন্য বিজ্ঞাপনকারী (Advertiser) এর কাছ থেকে কমিশন (Commission) গ্রহণ করে। এই কাজগুলির মধ্যে রয়েছে লিড জেনারেশন, ওয়েবসাইট ট্রাফিক বৃদ্ধি, পণ্য বিক্রয়, ইমেইল লিস্ট তৈরি করা ইত্যাদি।

সিপিএ মার্কেটিং এর মাধ্যমে একজন ব্যক্তি যেমন টাকা ইনকাম করতে পারে, তেমনি একটি ব্যবসার মালিক তার ওয়েবসাইটের জন্য ট্র্যাফিক/ই-মেইল মার্কেটিং এর জন্য ই-মেইল লিস্ট/পণ্য বিক্রয় ইত্যাদি করতে পারে।

ই-কমার্স মার্কেটিং

ই-কমার্স মার্কেটিং হচ্ছে একটি প্রক্রিয়া যার মাধ্যমে একটি ই-কমার্স ব্যবসায়ের পণ্য সম্পর্কে গ্রাহকদের কাছে প্রচারণা চালানো হয় এবং পণ্য বা সেবা বিক্রয় করা হয়। ই-কমার্স মার্কেটিং এর ভিতরে কন্টেন্ট মার্কেটিং, সার্চ ইঞ্জিন অপ্টিমাইজেশন, সোশ্যাল মিডিয়া মার্কেটিং সহ আরও অন্যান্য বিষয় রয়েছে। অর্থাৎ, একটি ই-কমার্স ওয়েবসাইটের পণ্য বা সেবা বিক্রয় করার জন্য ডিজিটাল মার্কেটিং এর অনেক পদ্ধতি ব্যবহার করা হয়ে থাকে।

মার্কেট ও কম্পিটিটর রিসার্চ

একজন ডিজিটাল মার্কেটার হতে হলে আপনাকেমার্কেট ও কম্পিটিটর রিসার্চ করতে জানতে হবে। বিভিন্ন রকম ডাটা নিয়ে সেগুলো রিসার্চ করতে এবং রিসার্চ করার মাধ্যমে বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত নিতে জানতে হবে।

রিসার্চ করার মাধ্যমে ভবিষ্যৎ মার্কেটের পরিস্থিতি সম্পর্কে ধারণা পাওয়া যায়। একজন অভিজ্ঞ ডিজিটাল মার্কেটার রিসার্চ করার মাধ্যমে ভবিষ্যৎ ট্রেন্ড সম্পর্কে ধারণা করতে পারে এবং সে অনুযায়ী তার পরিকল্পনা সাজিয়ে থাকে।

ডিজাইন

একটি প্রবাদ আছে, "একটি ছবি, হাজারটি শব্দের চেয়ে তথ্যবহুল" । একজন ডিজিটাল মার্কেটার হিসেবে আপনাকে ডিজাইন সম্পর্কে ধারণা রাখতে হবে। যেহেতু ডিজিটাল কন্টেন্ট ছাড়া অনলাইন মার্কেটিং করা সম্ভব নয় তাই এই বিষয়ে আপনার ভালো ধারনা প্রয়োজন।

যেমন - একটি ফেসবুক মার্কেটিং ক্যাম্পেন এর সফলতা নির্ভয় করবে এতে ব্যবহার করা ইমেজ, টেক্সট, ভিডিও এর উপরে। তাই আপনি যদি প্রফেশনাল নাও হন, ডিজাইন সেন্স গ্রো করতে ব্যসিক ফটোশপ-এর কাজগুলো শিখা থাকলে ডিজাইনারকে ইন্সট্রাকশন দেয়া সহজ হয়।

নিজে থেকেই যদি ছোট ছোট ডিজাইন যেমন ব্যানার, সোশ্যাল মিডিয়া পোস্ট ইমেজ, লোগো ইত্যাদি তৈরি করতে পারেন, তাহলে অন্য কারও প্রতি নির্ভর করে থাকতে হবেনা। এছারাও ওয়েব ডিজাইন সম্পর্কে ধারনা থাকেতে হয়। এতে করে খরচ কমবে এবং সময় বাঁচবে।

নেটওয়ার্কিং

নেটওয়ার্কিং যার যত ভালো, সে তত স্মার্টভাবে এবং দ্রুত সময়ে কাজ সম্পন্ন করতে পারে। নেটওয়ার্কিং করে ইন্ডাস্ট্রির বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিদের সাথে যোগাযোগ রক্ষা করা যায় এবং অনেক বিষয়ে অবগত হওয়া যায়। একজন ডিজিটাল মার্কেটার এর নেটওয়ার্কিং স্কিল ভালো হতে হবে। এতে করে পার্সোনাল ব্রান্ডিং স্ট্রং হয়।

পার্সোনাল ব্রান্ডিং

একজন ডিজিটাল মার্কেটার হিসেবে পার্সোনাল ব্রান্ডিং করতে হবে। প্রতিযোগিতাপূর্ণ বাজারে টিকে থাকার জন্য একমাত্র উপায় হচ্ছে পার্সোনাল ব্রান্ডিং করা। প্রতিষ্ঠানের ব্রান্ডিং এর পাশাপাশি পার্সোনাল ব্রান্ডিং এর মাধ্যমে একজন ডিজিটাল মার্কেটার নিজের পরিচিত বৃদ্ধি করতে পারে। এতে করে তার প্রফেশনালিজম বৃদ্ধি পায়।

মাইক্রোসফট এক্সেল

মাইক্রোসফট এক্সেল বা গুগল সীট এর যেকোনো একটি স্কিল থাকা খুব জরুরি।

বর্তমান যুগে যার কাছে যত বেশি তথ্য আছে, সে তত বেশি ধনী। যেকোনো প্রকার তথ্য এবং উপাত্ত সঠিকভাবে সংরক্ষণ করার একটি সেরা পদ্ধতি হচ্ছে মাইক্রোসফট এক্সেল ব্যবহার করা। একজন ডিজিটাল মার্কেটার হিসেবে মাইক্রোসফট এক্সেল সম্পর্কে জ্ঞান থাকা আবশ্যক। এতে করে, যেকোনো প্রকার তথ্য এবং উপাত্ত সংরক্ষণ করার পাশাপাশি সেসব তথ্য নিয়ে অ্যানালাইসিস করতে সুবিধা হবে।

এছারাও, ক্লাইন্ট রিপোর্টিইং, টাস্ক ম্যানেজমেন্ট, ও প্ল্যানিং পর্যায়ে এক্সেল এর ব্যবহার অপরিহার্য।

সোশ্যাল পেইড অ্যাডভার্টাইজিং

সোশ্যাল মিডিয়াতে এখন ফ্রিতে মার্কেটিং করে অনেক কম রিচ পাওয়া যায়। ফ্রি জিনিসটি এখন তেমন কার্যকর নয়। সোশ্যাল মিডিয়াতে পেইড অ্যাডভার্টাইজিং করার মাধ্যমে প্রতিষ্ঠানের ব্রান্ডিং করা, পণ্য এবং সেবা সম্পর্কে গ্রাহকদের কাছে প্রচারণা চালানো এবং পণ্য ও সেবা বিক্রয় করা সম্ভব হচ্ছে। একজন ডিজিটাল মার্কেটার হিসেবে সোশ্যাল পেইড অ্যাডভার্টাইজিং সম্পর্কে ধারনা থাকা উচিত।

অটোমেশন

সময় অনেক মূল্যবান জিনিস। AI এর যুগে এখন মানুষ নিজে অনেক কাজ না করে অটোমেশন করে সেসব কাজ AI দিয়ে করে নিচ্ছে। এই সুযোগ লুফে নেয়ার মাধ্যমে একজন ডিজিটাল মার্কেটার নিজের সময় বাঁচানোর মাধ্যমে অন্যান্য কাজে দক্ষতা অর্জন করা কিংবা অন্য কাজ করার মাধ্যমে বাড়তি উপার্জন করতে পারে। অটোমেশন করার মাধ্যমে সময় বাঁচানোর পাশাপাশি খরচ কমানো সম্ভব।

প্রেজেন্টেশন ডিজাইন

একজন মার্কেটিং এক্সপার্ট এর একটি গ্রেট স্কিল হচ্ছে প্রেজেন্টেশন ডিজাইন করতে জানা। ক্লায়েন্ট এর প্রেজেন্টেশন, কিংবা ওয়েবিনার এর জন্য প্রেজেন্টেশন, যে কারণেই প্রেজেন্টেশন করতে হোক না কেন, প্রেজেন্টেশন করার জন্য প্রেজেন্টেশন ডিজাইন সম্পর্কে জানা থাকতে হবে। এতে করে, একজন ডিজিটাল মার্কেটার তার রিসার্চ করা ডাটা পূর্নাঙ্গভাবে তুলে ধরতে সক্ষম হয়।

ইনফ্লুয়েন্সার মার্কেটিং

ইনফ্লুয়েন্সারদের সাথে যোগাযোগ করার মাধ্যমে তাদের দ্বারা প্রতিষ্ঠানের বা পার্সোনাল ব্রান্ডিং করার মাধ্যমে ব্রান্ড অ্যাওয়ারনেস তৈরি করার পাশাপাশি পণ্য বা সেবা সম্পর্কে প্রচারণা চালানো যায়। বর্তমান সময়ে ইনফ্লুয়েন্সার মার্কেটিং অনেক জনপ্রিয় হয়ে উঠছে। কারণ, মানুষ এখন তাদের পছন্দের ইনফ্লুয়েন্সারদের অনুসরণ করার মাধ্যমে অনেক কাজ করে থাকে। তাই, একজন ডিজিটাল মার্কেটার হিসেবে ইনফ্লুয়েন্সার মার্কেটিং জানতে হবে।

ওয়ার্ডপ্রেস

পৃথিবীতে যতগুলো ওয়েবসাইট রয়েছে, সেগুলো যেসব CMS দিয়ে তৈরি করা হয়েছে, তাদের মাঝে ওয়ার্ডপ্রেস সবথেকে বেশিবার ব্যবহার করা হয়েছে। অর্থাৎ, ওয়ার্ডপ্রেস ব্যবহার করে অধিকাংশ ওয়েবসাইট তৈরি করা হয়েছে। ওয়ার্ডপ্রেস দিয়ে অল্প সময়ে একটি ওয়েবসাইট তৈরি করা যায়। একজন ডিজিটাল মার্কেটার এর ওয়ার্ডপ্রেস সম্পর্কে জানা থাকা উচিত। এতে করে, নিজের জন্য বা ক্লায়েন্ট এর জন্য অল্প সময়ে একটি প্রফেশনাল মানের ওয়েবসাইট তৈরি করা সম্ভব। খরচ বাঁচানো, নির্ভরতা কমানো এবং সময় বাঁচানোর জন্য এটি একটি সেরা মাধ্যম।

কমিউনিকেশন

শুধুমাত্র মার্কেটিং করা বা বিজ্ঞাপন দেয়ার মাধ্যমে কাজ শেষ হয়ে যায়না। এখন সঠিক পদ্ধতিতে পণ্য বা সেবা সম্পর্কে প্রচারণা করার পর সেসব পণ্য বা সেবা বিক্রয় করার জন্য গ্রাহকদের সমস্যার কথা শুনতে হবে, তাদের জন্য আরও উন্নত সেবা নিশ্চিত করতে হবে। এজন্য প্রয়োজন সঠিক পদ্ধতিতে যোগাযোগ করা। একজন ডিজিটাল মার্কেটার হিসেবে কমিউনিকেশন স্কিল গ্রো করতে হবে।

কনভার্সন রেট অপ্টিমাইজেশন

ডিজিটাল মার্কেটিং করার মাধ্যমে ওয়েবসাইটে শুধুমাত্র ট্র্যাফিক নিয়ে আসাই নয়, সেই ট্র্যাফিককে কাস্টমার এ রূপান্তর করার জন্য একজন ডিজিটাল মার্কেটার এর A/B টেস্টিং জানতে হবে। কপিরাইটিং, ইউজার এক্সপেরিয়েন্স এবং কল টু একশন (CTA) আরও উন্নত করার মাধ্যমে একজন ডিজিটাল মার্কেটার কনভার্সন রেট অপ্টিমাইজেশন করে থাকে। এতে করে, প্রতিটি ট্র্যাফিকে কাস্টমার এ রূপান্তর করার জন্য সকল প্রচেষ্টা চালানো হয়।

শেষ কথা

আজকের এই ব্লগে ডিজিটাল মার্কেটিং কি কি শেখানো হয়, ডিজিটাল মার্কেটিং এর ধাপসমূহ নিয়ে বিস্তারিত তথ্য শেয়ার করেছি। এছাড়াও, ডিজিটাল মার্কেটিং কেন প্রয়োজন তা সম্পর্কেও জানতে পারবেন এখানে। ডিজিটাল মার্কেটিং গুরু হতে চাইলে পোস্টে উল্লেখ করে দেয়া কাজগুলো শিখতে হবে। এখানে থাকা প্রতিটি বিষয় ডিজিটাল মার্কেটিং এর অন্তর্ভুক্ত।

এই কাজগুলো করে আপনার ব্যবসায়ের পণ্য বা সেবা বিক্রয় করতে পারবেন। কিম্বা ডিজিটাল মার্কেটার হিসেবে অন্যের ব্যবসায়ের জন্য কাজ করে অর্থ উপার্জন করতে পারবেন।

ডিজিটাল মার্কেটার হিসেবে নিজেকে গড়ে তুলতে চাইলে উপরে উল্লেখ করে দেয়া এই ২০টি স্কিল অর্জন করতে পারেন। এতে করে একজন দক্ষ এবং অভিজ্ঞ ডিজিটাল মার্কেটার হতে পারবেন।