ইনটেনসিভ ইনকাম আমাদের সকলের স্বপ্ন। কখনো কী এটা ভেবেছেন ব্লগ লিখে কীভাবে টাকা উপার্জন করবেন? আমার ধারণা আপনি ভেবেছেন।
ব্লগ লিখে আয় করতে হলে -
সুতরাং বুঝতেই পারছেন,একটি ব্লগ তৈরি করবেন যেখানে আপনি আপনার লেখা আর্টিকেলগুলো পাবলিশ করবেন এবং যেকোনো একটি মনিটাইজেশন প্লাটফর্মে সাইনআপ করে অ্যাড বা প্রডাক্ট প্রমোশন করে অর্থ উপার্জন করবেন।
যদিও এগুলো ছাড়াও বেশ কীছু উপায় ব্লগ করে টাকা উপার্জন করা যেতে পারে। যেমন আপনি অন্য সাইটে আর্টিকেল লিখে টাকা নিতে পারেন। কীন্তু আমার এই ওয়েবসাইটে আমি শুধু ইনটেনসিভ ইনকামের গাইড দিয়ে থাকী তাই, ওইসব বিষয়ে আলোচনা করা হলো না।
বরং, এই আর্টিকেল থেকে আপনি জানতে পারবেন কীভাবে আপনি ব্লগ লিখে নিয়মিত টাকা আয় করতে পারেন।
আর এটা করে আপনার বর্তমান মাসিক বেতনের থেকেও কয়েক গুণ বেশি টাকা আয় করা সম্ভব।
সে যাই হোক পয়সা নিয়ে হিসাব-নিকাশ এখন না হয় থাক। আয় চিন্তা মাথায় ঘুরপাক থাকলে ক্রিয়েটিভ কোন কাজে সফলতা আশা করবেন না।
Learning থেকে L রিমুভ করলে Earning হয়। সুতরাং, যত ভালো করে শিখতে পারবেন তত ভালো আর আয় করতে পারবেন।
তো আর কথা না বাড়িয়ে শুরু করা যাক, কীভাবে আপনি ব্লগিং করে ইনটেনসিভ ইনকামের স্বপ্ন পূরণ করবেন।
নতুন যারা অনলাইন মার্কেটিং এ প্রফেশনাল হিসেবে নিতে চাচ্ছেন, ব্লগিং ও অ্যাডসেন্স ব্যবহার করে আয় করাটা তাদের জন্য সহজ।
কারণ অনলাইন মার্কেটপ্লেস অলরেডি ক্লাউডেড। কীছু ক্ষেত্রে ফ্রিল্যান্সার থেকে ক্লায়েন্টের সংখ্যা কম। আবার আয় ও এককালীন।যখন কাজ করেছেন তখনই শুধু টাকা আয় হচ্ছে।
অন্যদিকে আফিলিয়েট বা অ্যাডসেন্স ব্লগিং হলো ইনটেনসিভ ইনকাম আরেকটি পথ। যেমন একটি বৃক্ষ রোপণ করলে তার ফল অনেকদিন ধরে ভোগ করা যায়, ব্লগিং তেমনই।
আপনার লেখা প্রতিটি ব্লগ একটি করে চারা, যা সার্চ ইঞ্জিনের প্রথম পেজে rank করে ভিজিটর আনতে হবে। তারাই আপনার সাইটের অ্যাড ক্লিক করবে বা অ্যাফিলিয়েটেড প্রোডাক্ট কীনবে।
আর...
বর্তমানে বাংলাদেশের অ্যাফিলিয়েট মার্কেটার ও অ্যাডসেন্স ব্লগারদের জন্য আর্টিকেল লিখে আয় করা যায়। অর্থাৎ দেশীয় মার্কেটপ্লেস ও আপনি ফ্রিল্যান্সিং কন্টেন্ট রাইটার বা ব্লগ রাইটার হিসেবে কাজ করতে পারেন। আবার, আপনার প্রয়োজনে কন্টেন্ট রাইটিং সার্ভিস নিতে পারেন।
ব্লগিং একটি ব্যবসা। এখানে আপনার ইনভেস্টমেন্টের প্রয়োজন আছে। তবে আপনার যদি নিজের ব্লগ লেখার দক্ষতা থাকে তবে আপনার ইনভেস্টমেন্টের পরিমাণ শূন্যের কোঠায় নেমে আসতে পারে।
ব্লগিং করে ইনটেনসিভ ইনকাম করা কোন সাধারন ব্যাপার নয়। বস্তুত এটি এসইও, কন্টেন্ট রাইটিং, ওয়েব ডিজাইনিং ডোমেইন হোস্টিং সম্পর্কে জ্ঞান ইত্যাদি বিষয়ের সমন্বয়ে সফলতা নির্ভর করে।
তবে এর মানে এটা নয় যে সবগুলো বিষয়ে আপনাকে জানতে হবে। যদি নিজে করতে পারেন তাহলে আর অন্য কোথাও টাকা খরচ করার প্রয়োজন পড়বে না। প্রাথমিক পর্যায়ে আপনি ফ্রি রিসোর্স ব্যবহার করে ব্লগিং শুরু করতে পারবেন।
এখন জেনে নিয়ে আর্নিং মডেল কেমন:
মনোযোগ নিয়ে নিচের ধাপগুলো পড়ুন এবং বোঝার চেষ্টা করুন, আপনি যদি নতুন হন তাহলে হয়তো বোঝা কঠিন হয়ে যাবে। তবে আমি চেষ্টা করছি সকলের জন্য সহজ করে লেখার।
সহজ করে বললে এটি হলো আপনার ওয়েবসাইট কী বিষয় হবে ও কী বিষয়ে আপনি লিখেন সেটি নির্ণয় করার উপায়।
এখন, প্রথমে একটি টপিকস বা নিস সিলেক্ট করতে হবে। যে বিষয়ে আপনি সাইট খুলবেন বা যে বিষয় নিয়ে সাইট তৈরি করবেন। যেমন টেক, বিউটি, স্বাস্থ্য, শিক্ষা ইত্যাদি।
ওয়েবসাইট তৈরি করার আগে একটি সুন্দর ডোমেইন নেম রেজিস্টার ও হোস্টিং কীনতে হবে। আপনার ইনভেস্টমেন্ট জনিত সমস্যা থাকলে ফ্রী blogger.com ব্যবহার করতে পারেন।
এরপর,ওয়েবসাইটটি সুন্দর করে ডিজাইন নিন।
এই ধাপে আপনাকে বিভিন্ন বিষয়ের উপরে ব্লগ লিখতে হবে। অর্থাৎ আপনি যে নিস সিলেক্ট করেছেন, ওই বিষয়ে বিভিন্ন টপিকস সিলেক্ট করে আর্টিকেল লিখতে হবে। এসইও এর ভাষায় এটাকে আমরা কীওয়ার্ড রিসার্চ বলে।
ব্লগ লেখার আগে যে টপিকস এর বিষয়বস্তুটি নিয়ে বিস্তারিত লিখতে হবে। আর, পর্যাপ্ত পরিমাণ জ্ঞান অর্জন করা অধ্যবসায় ছাড়াও এটি সম্ভব নয়।
ধরুন, "এসইও শিখতে কতদিন সময় লাগে" এই Topic এ নিয়ে লিখতে হলে। কতদিন সময় লাগবে তার সঠিক উত্তরটি দিতে হবে ও কেন লাগবে সেটা সাজিয়ে লিখতে হবে।
তারপরে, Content Optimization করতে হবে। বা কন্টেন্টটি র্যাঙ্কীং এর জন্য উপযুক্ত করে তুলতে হবে।
বাজেট থাকলে আপনি মানসম্মত লেখা কীনতে পারেন।
আপনার সফলতা ও ব্যর্থতা এই ধাপের উপর নির্ভর করবে। কীওয়ার্ড রিসার্চ এটি সার্চ ইঞ্জিন অপটিমাইজেশন এর প্রথম ধাপ গুলোর একটি।
ভিজিটর না থাকলে মনিটাইজেশন করে কোন লাভ হবে না। আবার শুধু ব্লগ লিখে ও ভিজিটর পাওয়া খুব একটা সম্ভব নয়।
5. সার্চ ইঞ্জিন অপটিমাইজেশন এর গুরুত্বপূর্ণ ধাপ গুলো হল।
তারপর বাকী থাকল মনিটাইজেশন, কোন উপায়তে মনিটাইজেশন করবেন তা আপনাকে ওয়েবসাইট তৈরি করার আগেই নিস সিলেক্ট করার সময় ঠিক করে নিতে হবে।
যেমনঃ আপনি যদি অ্যাডসেন্স এর জন্য ওয়েবসাইট খুলতে চান তাহলে আপনাকে ইনফরমেটিভ টপিক নিয়ে লিখতে হবে। আবার অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং করলে buying keyword টার্গেট করে লিখতে হবে।
এছাড়াও আপনি চাইলে নিজের পণ্য বিক্রি করতে পারেন। তখন, আপনার পন্যের সম্পর্কীত যে সব বিষয় মানুষ অনলাইনে খোজে সেগুলি নিয়ে আর্টিকেল লিখতে হবে।
উপরের পাঁচটি ধাপ এর উপর ব্লগ করে আপনার সফলতা নির্ভর করে। আপনি যদি নতুন হন তাহলে এ পাঁচটি বিষয় সম্পর্কে পর্যাপ্ত ধারণা নিতে হবে।
একজন সফল ব্লগার হতে হলে যে বিষয়গুলো আপনাকে অবশ্যই জানতে হবে সেগুলো নিয়ে নিচে আলোচনা করা হলো।
এসইও কী, এই সম্পর্কে আমাদের সকলেই কম বেশি ধারণা আছে। এসইও হলো এমন একটি মাধ্যম যার মাধ্যমে আপনার সাইটে ট্রাফিক বা ভিজিটর আনতে পারবেন।
সাইটের ট্রাফিকের উপরে নির্ভর করবে আয়। অ্যাডসেন্স কীভাবে টাকা দেয় এসম্পর্কে আমার একটি ভিন্ন আর্টিকেল আছে যেটি পড়লে আপনি আরো ভালো ধারণা পাবেন।
আবার, ওয়েব সাইট ডিজাইন, ডোমেইন নেম রেজিস্টার, ভাল হোস্টিং সম্পর্কে জানতে হবে।
কীওয়ার্ড হলো সে সকল শব্দ বা শব্দগুচ্ছ যেগুলো লিখলে মানুষজন সার্চ দেয়।
যদিও কীওয়ার্ড রিসার্চ সার্চ ইঞ্জিন অপটিমাইজেশন এর একটি ধাপ।
তবে, ব্লগ লিখে আয় করতে হলে কোন টপিক নিয়ে ব্লগ কন্টেন্ট লিখবেন, সেটা লিখে গুগলের রাঙ্কিং করে ভিজিটর আনা সম্ভব কীনা সেটা আগে নির্ণয় করে নিতে হবে।
কন্টেন ইজ দ্যা কীং, এ কথাটা আমরা সবাই জানি। একটি এসইও অপটিমাইজ কন্টেন্ট থাকলে ranking এর জন্য সুবিধাজনক।
বর্তমান প্রতিযোগিতামূলক ব্লগিং সেক্টরে ভাল কন্টেন্ট অপরিহার্য।
তো, আপনি ব্লগিং করে আয় করার জন্য মনস্থির করে ফেলেছেন?
যদি তাই হয়, তাহলে ব্লগিং সম্পর্কীত যে সকল বিষয় আপনাকে জানতে হবে সেগুলো একটি একটি করে শেখা শুরু করেন।
তাড়াহুড়ো করা বা একদিনে সফলতা পাওয়া সম্ভব নয়। যেহেতু আমরা ইন্টার্নশিপ ইনকামের স্বপ্ন দেখি সেহেতু long-term চিন্তা করেই মাঠে নামতে হবে।
ব্লগের সাথে ইনভেসমেন্ট একটি অপরিহার্য বিষয়। আমি আগেই বলেছি ব্লগ লিখে আয় করা একটি ব্যবসা। আর ব্যবসার মূলধন হচ্ছে, আপনার ওয়েবসাইট এবং কন্টেন্ট।
সুতরাং, আপনার ব্লগ লেখার মান সুন্দর করতে পারলে এবং সাথে কীওয়ার্ড রিসার্চ ও কন্টেন্ট অপটিমাইজেশন এই দুইটি বিষয়ে দক্ষতা অর্জন করতে পারলে, আয় করার সহজ হয়ে যাবে।
Table of Contents
ভাইয়া, অসাধারণ! এত সুন্দর করে সাজিয়ে লিখেছেন। শিক্ষনীয় তো বটেই তার উপর এতো সহজ করে উপস্থাপন করেছেন। মাশাআল্লাহ।