ইন্টারনেট - তথ্যের বিশাল সমুদ্র। এত বিশাল তথ্য ভান্ডার থেকে নিজের প্রয়োজনীয় তথ্য খুঁজে বের করা কঠিন হতে পারে। তবে এই বিশাল দুনিয়ায় কিছু সহকারী আছে যাদের কাজই হল আপনার জন্য সঠিক তথ্য সরবরাহ করা। তাদেরই বলা হয় সার্চ ইঞ্জিন, যেমন গুগল, বিং, ইয়াহু ইত্যাদি।
সার্চ ইঞ্জিন কি?
Search Engine হল এমন একটি কম্পিউটার প্রোগ্রাম যা ইন্টারনেটের বিশাল তথ্যের ভান্ডার থেকে আপনার প্রশ্নের উত্তর বা তথ্য খুঁজে বের করে দেয়।
যখন আমরা ইন্টারনেটে কিছু তথ্য খুঁজতে চাই, তখন সার্চ ইঞ্জিন আমাদের দেওয়া কিওয়ার্ড বা শব্দগুলোর ভিত্তিতে বিভিন্ন ওয়েব পেজ থেকে তথ্য নিয়ে আসে।
বাংলায় বলতে গেলে, সার্চ ইঞ্জিন এমন একটি ডিজিটাল সরঞ্জাম, যা ইন্টারনেটে থাকা অসংখ্য তথ্যের মধ্যে থেকে সঠিক উত্তর বা তথ্য খুঁজে বের করে। আমরা যখন ইন্টারনেটে কিছু জানতে চাই, তখন সার্চ ইঞ্জিন আমাদের সেই তথ্য দ্রুত সরবরাহ করে।
এটি মূলত ডিজিটাল অনুসন্ধান সিস্টেম যা হাজার কোটি অনলাইন ডকুমেন্ট থেকে ব্যবহারকারীকে তার প্রস্নের বা চাহিদা অনুযায়ী সঠিক ও প্রাসঙ্গিক তথ্য বা ফলাফল প্রদান করে।
১৯৪৫ সালে Vannevar Bush এর ‘অ্যাজ উই মে থিংক’ প্রবন্ধে প্রথম সার্চ ইঞ্জিনের ধারণা উঠে আসে। এরপর ১৯৮৬ সালে হিউলেট প্যাকার্ড প্রথম কার্যকর সার্চ ইঞ্জিন আবিষ্কার করে। এই সময় থেকেই সার্চ ইঞ্জিন প্রযুক্তির ব্যাপক উন্নতি ঘটেছে এবং আজকের গুগল, বিং, ইয়াহু এর মত শক্তিশালী সার্চ ইঞ্জিন গুলো ব্যবহৃত হচ্ছে।
সার্চ ইঞ্জিন কি করে?
আপনি যখন গুগল বা অন্য কোনো সার্চ ইঞ্জিনে কোনো কিছু খুঁজেন, তখন সেটা কীভাবে হয়, সেটা জানতে চান? মনে করুন আপনি ইন্টারনেটকে একটা বিশাল লাইব্রেরি। আর সার্চ ইঞ্জিন হল সেই লাইব্রেরির একজন দক্ষ লাইব্রেরিয়ান। আপনি যে বই খুঁজছেন, সেটা সে খুব তাড়াতাড়ি খুঁজে বের করে দেয়।
ইন্টারনেট ব্যবহারকারীদের জন্য সার্চ ইঞ্জিনের প্রয়োজনীয়তা অপরিসীম। এটি বিভিন্ন কাজে ব্যবহৃত হয়:
- তথ্য সংগ্রহ করা
- নির্দিষ্ট ওয়েবসাইট বা কন্টেন্ট খুঁজে বের করা
- ছবি, ভিডিও, এবং নিউজ খোঁজা
- শিক্ষা, ব্যবসা, এবং গবেষণার জন্য প্রয়োজনীয় তথ্য খোঁজা ইত্যাদি
সার্চ ইঞ্জিন কিভাবে কাজ করে
সার্চ ইঞ্জিন হল এমন একটি কম্পিউটার প্রোগ্রাম যা ইন্টারনেটের বিশাল তথ্যের ভান্ডার থেকে আপনার প্রশ্নের উত্তর খুঁজে বের করে দেয়।
আপনি যখন কোনো কিছু সার্চ করেন, তখন সার্চ ইঞ্জিনটি আপনার দেওয়া শব্দগুলো (কিওয়ার্ড) বিশ্লেষণ করে এবং তারপর ইন্টারনেটের বিলিয়ন বিলিয়ন ওয়েব পেজ স্ক্যান করে। এই স্ক্যানিং প্রক্রিয়াকে ক্রলিং বলে।
ক্রলিংয়ের পরে, সার্চ ইঞ্জিনটি সবচেয়ে প্রাসঙ্গিক ওয়েব পেজগুলোকে বা ডিজিটাল কন্টেন্ট গুলোকে খোজে তারপর বিষয়বস্তু শনাক্ত করে এবং সেগুলোকে আপনার সামনে উপস্থাপন করে। এই প্রক্রিয়াকে ইনডেক্সিং বলে।
আপনি যখন গুগল বা অন্য কোনো সার্চ ইঞ্জিনে কোনো কিছু খুঁজেন, তখন সেটা কীভাবে হয়, সেটা জানতে চান?
সার্চ ইঞ্জিন ডাটা সংগ্রহ ও প্রদানের ক্ষেত্রে সাধারণত তিনটি ধাপে কাজ করে:
- স্পাইডার বা ওয়েব ক্রলার: এটি ওয়েবে বিভিন্ন সাইট ভিজিট করে এবং নতুন তথ্য সংগ্রহ করে।
- ইনডেক্সার: সংগৃহীত তথ্য ইনডেক্স করে এবং ডুপ্লিকেট তথ্য মুছে দেয়।
- প্রোপার্টি অ্যালগোরিদম: এটি সঠিক ফলাফল প্রদান করতে সহায়তা করে।
এটা কীভাবে হয়, তা একটু বিস্তারিত করে বলা যাক
ইন্টারনেট স্ক্যান
সার্চ ইঞ্জিনের বিশেষ বোট (ক্রলার) ইন্টারনেটের কোণে কোণে ঘুরে বেড়ায় এবং সব ধরনের তথ্য সংগ্রহ করে। এটা যেন একটা বড় স্পাইডার, যে ইন্টারনেটের জালে আটকে থাকা সব কিছুই দেখে নেয়।
এই কাজগুলো করে স্পাইডার বা ওয়েব ক্রলার: এটি ওয়েবে বিভিন্ন সাইট ভিজিট করে এবং নতুন তথ্য সংগ্রহ করে।
ইনডেক্স তৈরি
সংগ্রহ করা সব তথ্যকে সার্চ ইঞ্জিন একটি বিশাল তালিকায় সাজিয়ে রাখে। এই তালিকাকে ইনডেক্স বলে। এটা যেন একটা বড় ডিকশনারি, যেখানে প্রতিটি শব্দের সাথে কোন কোন বইয়ে সেই শব্দটা আছে, সেটা লেখা থাকে। এখনে ইনডেক্সার কাজ করে যা সংগৃহীত তথ্য ইনডেক্স করে এবং ডুপ্লিকেট তথ্য মুছে দেয়।
আপনার সার্চ
আপনি যখন কোনো কিছু সার্চ করেন, তখন সার্চ ইঞ্জিন আপনার দেওয়া শব্দগুলোকে এই ইনডেক্সে খুঁজে দেখে। আপনার দেওয়া কিওয়ার্ডগুলোর সাথে মিল খাটে এমন ওয়েব পেজগুলো খুঁজে বের করে এবং সেগুলোকে আপনার সামনে উপস্থাপন করে।
আধুনিক সার্চ ইঞ্জিনগুলো এডভান্স ডাটা এনাল্যসিস ও সার্চ করার কারন বা অভিপ্রায় (intent) AI ব্যবহার করে বিশ্লেষণ করে বা বোঝার চেষ্টা করে যে আপনি আসলে কি খুঁজছেন।
ফলাফল দেখানো
ইনডেক্স থেকে সবচেয়ে মিল খাটা ফলাফলগুলোকে সার্চ ইঞ্জিন আপনার সামনে তুলে ধরে। সার্চ ইঞ্জিন বিভিন্ন কারণ বিবেচনা করে ফলাফলগুলোকে সাজায়। এই কারণগুলোকে র্যাঙ্কিং ফ্যাক্টর বলা হয়।
কিছু প্রধান র্যাঙ্কিং ফ্যাক্টর হল:
একটু উদাহরণ দিই: আপনি যদি "ঢাকা শহর" সার্চ করেন, তাহলে সার্চ ইঞ্জিন প্রথমে "ঢাকা" এবং "শহর" শব্দগুলোকে খুব ভালো করে বিশ্লেষণ করবে। তারপর ইন্টারনেটের বিশাল ডাটাবেসে গিয়ে ঢাকা শহর সম্পর্কে লেখা সব ওয়েবপেজ খুঁজে বের করবে। তারপর সেই ওয়েবপেজগুলোর মধ্য থেকে কোনটি ঢাকা শহর সম্পর্কে সবচেয়ে ভালো তথ্য দিচ্ছে, সেটা বুঝে আপনার সামনে তুলে ধরবে।
এখন এই ফলাফলগুলো কীভাবে সাজানো হয়, সেটাও একটু বলা যাক:
- কিওয়ার্ড: আপনি যে শব্দগুলো দিয়ে সার্চ করেন, সেগুলো সম্পর্কে ওই ওয়েবপেজে কি তথ্য আছে, সেটা দেখা হয়।
- সার্চ ইনটেন্ট: আপনি কি ধরনের তথ্য খুঁজছেন, সেটা বুঝে সার্চ ইঞ্জিন ফলাফল দেয়। উদাহরণস্বরূপ, যদি আপনি কোনো পণ্য কিনতে চান, তাহলে সার্চ ইঞ্জিন সেই ধরনের ওয়েবপেজগুলোকে উপরে রাখবে।
- ওয়েবপেজের মান: ওয়েবপেজটি কতটা ভালোভাবে তৈরি করা হয়েছে, এর বিষয়বস্তু কতটা নির্ভরযোগ্য, তথ্য আপডেটেট কিনা ইত্যাদি বিবেচনা করা হয়।
- ব্যাকলিংক: অন্যান্য ওয়েবসাইট থেকে ওই ওয়েবপেজে যে পরিমান হাইপার লিংক বা ব্যাকলিংক দেওয়া আছে, সেটাও গুরুত্বপূর্ণ। অনেক ওয়েবসাইট থেকে যদি কোনো ওয়েবপেজে লিঙ্ক দেওয়া থাকে, তাহলে সার্চ ইঞ্জিন মনে করে সেই ওয়েবপেজটি গুরুত্বপূর্ণ।
- মোবাইল-ফ্রেন্ডলি: যে ওয়েবপেজ মোবাইলে সহজে দেখা যায়, সেই পেজগুলো সার্চ ইঞ্জিনে ভালো অবস্থানে থাকে। কারণ এখন বেশিরভাগ মানুষ মোবাইলে সার্চ করে।
- ইউজার ইন্টারেকশন: ব্যবহারকারীরা ওয়েবপেজে কতক্ষণ থাকে, কোথায় ক্লিক করে—এসব দেখেও সার্চ ইঞ্জিন সিদ্ধান্ত নেয়। যদি ব্যবহারকারীরা পেজে বেশি সময় কাটায়, তবে মনে করা হয় সেই পেজটি তাদের জন্য গুরুত্বপূর্ণ।
- ওয়েবপেজের লোড টাইম: ওযে ওয়েবপেজটি দ্রুত লোড হয়, সার্চ ইঞ্জিন সেই পেজকে উপরে রাখে। কারণ ধীর গতির পেজ ব্যবহারকারীদের বিরক্ত করে।
এখন আপনি হয়তো ভাবছেন, সার্চ ইঞ্জিন এত তাড়াতাড়ি ফলাফল কীভাবে দেখায়? এর পেছনে আছে বিশাল কম্পিউটার এবং অত্যাধুনিক প্রোগ্রাম। এই প্রোগ্রামগুলো এতই শক্তিশালী যে, আপনি যে কোনো কিছু সার্চ করলে মাত্র কয়েক সেকেন্ডের মধ্যে আপনার সামনে হাজার হাজার ফলাফল তুলে ধরে। এই সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে পড়ুন - আধুনিক সার্চ ইঞ্জিন র্যাঙ্কিং মেথড।
সার্চ ইঞ্জিনের বিভিন্ন প্রকারভেদ কি
সার্চ ইঞ্জিনকে তিনটি ভাগে ভাগ করা যায়:
১. প্রাইমারি সার্চ ইঞ্জিন
এগুলো হল সবচেয়ে সাধারণ বা কমন ধরনের সার্চ ইঞ্জিন যেমন গুগল, বিন ইত্যাদি। এগুলো ইন্টারনেটের বিশাল তথ্যের ভান্ডার থেকে আপনার প্রশ্নের সবচেয়ে প্রাসঙ্গিক উত্তর খুঁজে বের করে। যেমন গুগল, বিং, ইয়াহু।
২. সেকেন্ডারি সার্চ ইঞ্জিন
এগুলো প্রাইমারি সার্চ ইঞ্জিনের ফলাফলকে আরও বিশ্লেষণ করে এবং বিশেষ কোনো বিষয়ে ফোকাস করে থাকে। উদাহরণস্বরূপ, একটি সেকেন্ডারি সার্চ ইঞ্জিন শুধুমাত্র নিউজ আর্টিকেল খুঁজে বের করতে পারে। যেমন এমএসএন, স্ন্যাপ, হটবট, গুগল নিউজ, বিন ইমেজ।
৩. টার্গেটেড সার্চ ইঞ্জিন
এগুলো কোনো নির্দিষ্ট বিষয় বা ইন্ডাস্ট্রির উপর ফোকাস করে থাকে। উদাহরণস্বরূপ, একটি টার্গেটেড সার্চ ইঞ্জিন শুধুমাত্র মেডিকেল জার্নাল বা রিসার্চ পেপার খুঁজে বের করতে পারে। যেমন এওএল সার্চ, অল্টা ভিস্তা, PubMed (মেডিকেল), Google Scholar (অ্যাকাডেমিক)।
জনপ্রিয় সার্চ ইঞ্জিনসমূহ কি কি?
বর্তমানে বেশ কিছু জনপ্রিয় সার্চ ইঞ্জিন রয়েছে। তাদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য:
১. গুগল (Google)
গুগল বর্তমানে বিশ্বের সবচেয়ে জনপ্রিয় এবং ব্যবহৃত সার্চ ইঞ্জিন। এটি প্রতিদিন বিলিয়ন বিলিয়ন অনুসন্ধান পরিচালনা করে এবং ব্যবহারকারীদের সবচেয়ে প্রাসঙ্গিক এবং দ্রুত ফলাফল প্রদান করে। গুগল ক্রলার এবং ইনডেক্সিং প্রযুক্তি অত্যন্ত উন্নত, যা এটি কে সার্চ ইঞ্জিন মার্কেটে শীর্ষে রেখেছে। গুগল সার্চের জনপ্রিয়তা এর ব্যবহারকারীবান্ধব ইন্টারফেস, দ্রুত ফলাফল প্রদান, এবং নির্ভুলতা নিয়ে এসেছে।
২. ইয়াহু (Yahoo)
ইয়াহু দীর্ঘদিন ধরে ব্যবহৃত একটি সার্চ ইঞ্জিন, যা গুগলের আগে জনপ্রিয় ছিল। ইয়াহু একটি পূর্ণাঙ্গ ওয়েব পোর্টাল হিসেবে কাজ করে, যা ইমেল, খবর, ফাইন্যান্স, এবং অন্যান্য পরিষেবার সাথে সার্চ ইঞ্জিন সেবা প্রদান করে। যদিও ইয়াহুর জনপ্রিয়তা কিছুটা কমেছে, এটি এখনও একটি নির্ভরযোগ্য সার্চ ইঞ্জিন হিসেবে বিবেচিত হয়।
৩. বিং (Bing)
বিং মাইক্রোসফটের সার্চ ইঞ্জিন যা গুগলের পরে জনপ্রিয়। এটি ব্যবহারকারীদের প্রাসঙ্গিক এবং বিশদ ফলাফল প্রদান করে এবং এর ভিজ্যুয়াল সার্চ এবং ভিডিও সার্চ ফিচার ব্যবহারকারীদের মধ্যে জনপ্রিয়। বিং মাইক্রোসফটের অন্যান্য সেবার সাথে একীভূত, যা ব্যবহারকারীদের জন্য আরও সুবিধাজনক করে তুলেছে।
৪. ডাকডাকগো (DuckDuckGo)
ডাকডাকগো একটি সার্চ ইঞ্জিন যা গোপনীয়তা রক্ষার জন্য বিশেষভাবে পরিচিত। এটি ব্যবহারকারীদের ব্যক্তিগত তথ্য সংগ্রহ করে না এবং ব্যবহারকারীদের সার্চ ইতিহাস ট্র্যাক করে না। এর ফলে, যারা গোপনীয়তার বিষয়ে উদ্বিগ্ন, তাদের জন্য ডাকডাকগো একটি আদর্শ সার্চ ইঞ্জিন।
৪. ব্যাডু (Baidu)
ব্যাডু চীনের প্রধান সার্চ ইঞ্জিন এবং এটি চীনা ভাষার অনুসন্ধানে বিশেষজ্ঞ। ব্যাডু চীনের ইন্টারনেট মার্কেটে প্রধান সার্চ ইঞ্জিন হিসেবে কাজ করে এবং এটি বিভিন্ন পরিষেবা প্রদান করে, যেমন ম্যাপস, নিউজ, এবং মিউজিক।
৫. অন্যান্য জনপ্রিয় সার্চ ইঞ্জিন
এছাড়াও কিছু অন্যান্য জনপ্রিয় সার্চ ইঞ্জিন রয়েছে, যেমন ইয়ান্ডেক্স (Yandex) যা রাশিয়ার প্রধান সার্চ ইঞ্জিন, এবং নাভার (Naver) যা দক্ষিণ কোরিয়ার জনপ্রিয় সার্চ ইঞ্জিন।
বাংলাদেশে কয়েকটি স্থানীয় বাংলা ভাষার সার্চ ইঞ্জিন উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে, তবে আন্তর্জাতিক সার্চ ইঞ্জিনের মতো এখনো তেমন কোনো জনপ্রিয় ও প্রতিষ্ঠিত বাংলা সার্চ ইঞ্জিন তৈরি হয়নি।
তবুও বাংলা ভাষায় কিছু সীমিত সার্চ ইঞ্জিন রয়েছে, যেগুলো সাধারণত বাংলা কনটেন্ট বা স্থানীয় তথ্য খুঁজে পেতে সহায়ক।
বাংলা ভাষার কয়েকটি পরিচিত সার্চ ইঞ্জিন ও উদ্যোগ
- পিপীলিকা (Pipilika) - এটি বাংলাদেশের প্রথম বাংলা ভাষার সার্চ ইঞ্জিন হিসেবে পরিচিত। পিপীলিকা চট্টগ্রাম প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (চুয়েট) এর শিক্ষার্থীদের তৈরি একটি উদ্যোগ, যা বাংলাভাষী কনটেন্ট খোঁজার জন্য তৈরি করা হয়েছিল। এটি বাংলা সংবাদ, শিক্ষা, এবং অন্যান্য স্থানীয় তথ্যের ওপর ফোকাস করে।
- আমার সার্চ (Amar Search) - এটি একটি বাংলা ভাষায় কাজ করে এমন সার্চ ইঞ্জিন, যা বিশেষ করে বাংলাদেশ ও বাংলাভাষী কনটেন্টের জন্য প্রাসঙ্গিক ফলাফল প্রদানে চেষ্টা করে।
তবে, এই উদ্যোগগুলো এখনও আন্তর্জাতিক সার্চ ইঞ্জিনের মতো জনপ্রিয়তা পায়নি এবং তথ্যের পরিধিও সীমিত।
FAQ
ব্রাউজার ও সার্চ ইঞ্জিন এর পার্থক্য কি?
ব্রাউজার হল একটি সফটওয়্যার যা ব্যবহারকারীকে ইন্টারনেট ব্রাউজ করতে সহায়তা করে। উদাহরণস্বরূপ, গুগল ক্রোম, মোজিলা ফায়ারফক্স ইত্যাদি। অন্যদিকে, সার্চ ইঞ্জিন হল একটি সফটওয়্যার যা ব্যবহারকারীকে ইন্টারনেট থেকে তথ্য খুঁজে পেতে সহায়তা করে। উদাহরণস্বরূপ, গুগল, ইয়াহু, বিং ইত্যাদি। ব্রাউজার এবং সার্চ ইঞ্জিন একে অপরের পরিপূরক।
ব্রাউজার এবং সার্চ ইঞ্জিনের মধ্যে পার্থক্য
বিষয় | ব্রাউজার | সার্চ ইঞ্জিন |
---|---|---|
মূল কাজ | ইন্টারনেটে ওয়েবসাইট এবং ওয়েব পেজ দেখায়। | ইন্টারনেট থেকে ব্যবহারকারীর প্রয়োজনীয় তথ্য খুঁজে পেতে সাহায্য করে। |
কাজের ধরন | ইন্টারনেটে থাকা ওয়েবসাইট অ্যাক্সেস করা এবং সেগুলো ব্রাউজ করা। | নির্দিষ্ট তথ্য খোঁজা এবং প্রাসঙ্গিক ওয়েবসাইট বা কন্টেন্ট প্রদর্শন করা। |
উদাহরণ | গুগল ক্রোম, ফায়ারফক্স, এজ, সাফারি | গুগল, বিং, ইয়াহু, ডাকডাকগো |
সরাসরি তথ্য সংগ্রহ | নিজে থেকে তথ্য সংগ্রহ করে না; শুধুমাত্র ব্যবহারকারীর প্রদত্ত লিংক বা URL থেকে তথ্য দেখায়। | নিজস্ব ডাটাবেস ও অ্যালগরিদম ব্যবহার করে বিভিন্ন ওয়েবসাইট স্ক্যান করে তথ্য সংগ্রহ ও প্রদর্শন করে। |
ব্যবহার | ওয়েবসাইট ব্রাউজ বা সার্ফ করার জন্য। | তথ্য অনুসন্ধানের জন্য। |
ডিফল্ট সার্চ ইঞ্জিন সেটিংস | অনেক ব্রাউজার তাদের নিজস্ব ডিফল্ট সার্চ ইঞ্জিন নিয়ে আসে (যেমন, গুগল ক্রোমে গুগল)। | সরাসরি বিভিন্ন ওয়েবসাইট স্ক্যান করে তথ্য সংগ্রহ করে এবং ফলাফল দেখায়। |
সার্চ ইঞ্জিন অপটিমাইজেশন (SEO) কি এবং কেন প্রয়োজন?
সার্চ ইঞ্জিন অপটিমাইজেশন (SEO) এর অর্থ হল একটি প্রক্রিয়া যার মাধ্যমে ওয়েবসাইটের অনুসন্ধান প্রোগ্রামের মাধ্যমে ডিজিটাল অনুসন্ধানে প্রাসঙ্গিক ফলাফল পাওয়া যায়। SEO কৌশলগুলির মধ্যে রয়েছে কিওয়ার্ড ব্যবহার, কন্টেন্ট অপটিমাইজেশন, এবং ব্যাকলিংক স্ট্র্যাটেজি।
সবচেয়ে ভালো সার্চ ইঞ্জিন কোনটি?
সবচেয়ে ভালো সার্চ ইঞ্জিন কোনটি, তা আপনার নিজের প্রয়োজনের উপর নির্ভর করে।
- সাধারণ ব্যবহারের জন্য: গুগল সাধারণত সবচেয়ে ভালো বিকল্প। এটি বিশাল পরিমাণ তথ্যের মধ্য থেকে সবচেয়ে প্রাসঙ্গিক ফলাফল খুঁজে বের করে।
- গোপনীয়তা: ডাকডাকগো ব্যবহারকারীর গোপনীয়তা বেশি গুরুত্ব দেয়।
- বিশেষ বিষয়: কিছু সার্চ ইঞ্জিন কোনো নির্দিষ্ট বিষয়ে বিশেষজ্ঞ হতে পারে, যেমন মেডিকেল জার্নালের জন্য PubMed।
তাই, আপনার জন্য কোন সার্চ ইঞ্জিন সবচেয়ে ভালো হবে, তা নির্ধারণ করতে আপনার নিজের প্রয়োজনগুলো বিবেচনা করুন।
পৃথিবীতে সার্চ ইঞ্জিন কয়টি?
পৃথিবীতে হাজার হাজার সার্চ ইঞ্জিন আছে। তবে সবচেয়ে জনপ্রিয় এবং ব্যবহৃত সার্চ ইঞ্জিন হল গুগল। এরপর আছে বিন, ইয়াহু, ডাকডাকগো ইত্যাদি। ছোট ছোট অনেক কোম্পানিও নিজস্ব সার্চ ইঞ্জিন তৈরি করে থাকে, যা কোনো নির্দিষ্ট বিষয়ে বিশেষজ্ঞ হতে পারে।